১৮ টি উল্লেখযোগ্য জীবনানন্দ দাশের উক্তি
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম আধুনিক বাংলার কবি লেখক ও প্রাবন্ধিক জীবনানন্দ দাশ ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী । বাংলা সাহিত্যে তার অসামান্য কীর্তি বনলতা সেন কবিতা নিখিল
বঙ্গরবীন্দ্র সাহিত্য সম্মেলনে পুরস্কৃত হয় এবং তার শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থটিও ভারত সরকারের সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার লাভ করে। তিনিকবি রূপসী বাংলার হিসেবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। কবিতার মৃত্যুর পূর্বে ২১ টি উপন্যাস ও ১২৬ টি ছোট গল্প রচনা করেছেন।তার মৃত্যু পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ ‘রুপসীবাংলা’এবং ‘বেলা অবেলা কালবেলা’ তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়।
জীবনানন্দ দাশের উক্তি ও লিখা মানুষকে প্রেম, সৌন্দর্য,জীবন ও জীবনবোধ সম্পর্কে গতানুগতিকতার বাহিরে অন্য এক ধারণা প্রদান করে। তার প্রতিটি কবিতা যেন জীবন্ত মানুষ রূপে কথা বলে। “নির্জন কবি “নামে খ্যাত প্রতিভাবান মানুষটি ২২ অক্টোবর ১৯৫৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

জীবনানন্দ দাশের উল্লেখযোগ্য ১৮টি উক্তি
১)” যে নদী হারায়ে যায় অন্ধকারে –রাতে – নিরুদ্দেশে,
তাহার চঞ্চল জল স্তব্ধ হয়ে কাঁপায় হৃদয়!”
২)”আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ বসে অপেক্ষা করবার অবসর আছে।”
৩)”আজকে রাতে তোমায় আমার কাছে পেলে কথা
বলা যেত; চারিদিকে হিজল শিরীষ নক্ষত্র ঘাস হায়ার প্রান্তর।”
৪)” তবুও নদীর মানে স্নিগ্ধ শুশ্রূষার জল, সূর্য মানে আলো :
এখনো নারী মানে তুমি, কত রাধিকা ফুরালো। “
৫)” সব ছেড়ে দিয়ে আমি তোমারে একাকী ভালোবেসে
তোমার ছায়ার মতো ফিরিয়াছি তোমার পিছনে!”
৬“নক্ষত্রেরা চুরি করে নিয়ে গেছে, ফিরিয়ে দেবে না তাকে আর।”
৭)” শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা মাঠের উপরে-
বলিলাম- ‘একদিন এমন সময়
আবার আসিয়ো তুমি- আসিবার ইচ্ছা যদি হয়-
পঁচিশ বছর পরে।”
৮)”তোমাকে দেখার মতো চোখ নেই–তবু,
গভীর বিস্ময়ে আমি টের পাই–তুমি
আজও এই পৃথিবীতে রয়ে গেছ।”
৯)”পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে;
পৃথিবীর সব রূপ লেগে আছে ঘাসে;
পৃথিবীর সব প্রেম
আমাদের দু’জনার মনে; আকাশ ছড়ায়ে আছে শান্তি হয়ে আকাশে।”
১০)” আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
শতাব্দীতে, নক্ষত্রের নিচে।”
১১)”তোমার শরীর ,-
তাই নিয়ে এসেছিলে একবার;- তারপর,- মানুষের ভিড়
রাত্রি আর দিন
তোমারে নিয়েছে ডেকে কোন দিকে জানিনি তা,- হয়েছে মলিন
চক্ষু এই;- ছিঁড়ে গেছি- ফেড়ে গেছি ,- পৃথিবীর পথ হেঁটে হেঁটে
কত দিন রাত্রি গেছে কেটে !”
১২)” পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন;
মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীরই কাছে।”
১৩)” একদিন দিয়েছিলে যেই ভালোবাসা ,
ভুলে গেছ আজ তার ভাষা!
জানি আমি,- তাই
আমিও ভুলিয়া যেতে চাই
একদিন পেয়েছি যে ভালোবাসা
তার স্মৃতি – আর তার ভাষা
১৪)”বেতের ফলের মতো নীলাভ ব্যথিত তোমার দুই চোখ
খুঁজেছি নক্ষত্রে আমি- কুয়াশার পাখনায়।
চোখে তার যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার!
স্তন তার করুণ শঙ্খের মতো–দুধে আর্দ্র-কবেকার শঙ্খিনীমালার !”
১৫)“আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে –
সে কেন জলের মত ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়?”
১৬)”মিনারের মতো মেঘ সোনালি চিলেরে তার জানালায় ডাকে,
বেতের লতার নিচে চড়য়ের ডিম যেন শক্ত হয়ে আছে,
নমর জলের গন্ধ দিয়ে নদী বারবার তীরটিরে মাখে,
খড়ের চালের ছায়া গাঢ় রাতে জোছনার উঠানে পড়িয়াছে;
বাতাসে ঝিঁঝির গন্ধ — বৈশাখের প্রান্তরের সবুজ বাতাসে;
নীলাভ নোনার বুকে ঘর রস গাঢ় আকাঙক্ষায় নেমে আসে”
১৭)”চোখে তার
যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার !
স্তন তার
করুণ শঙ্খের মতো- দুধে আর্দ্র- কবেকার শঙ্খিনীমালার!
এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।”
১৮)”কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে!”
সবশেষে বলতে হয় কবি জীবনানন্দ দাশ নাম শুনলেই বাঙালির হৃদয়, তার নির্মিত নির্মল সবুজ গ্রাম বাংলার অপার সৌন্দর্য,চঞ্চলতা ও প্রশান্তিতে ভরে যায়। তার লেখায় তিনি প্রকৃতিকে এমন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যেন তা জীবন্ত হয়ে হৃদয়ে দোলা দেয় এবং জীবনানন্দ দাশের উক্তি মানুষের হৃদয় আলোড়ন তোলে অজানাকে জানার অভিপ্রায়।

Bachelor of Business Administration,
East West University