কোটিপতি হওয়ার ব্যবসা

ব্যবসা করে দ্রুত কোটিপতি হওয়ার অসাধারণ ১৫টি কলা-কৌশল

আজকের দিনে, আপনাকে কোটপতি হলে অবশ্যই আপনার কাছে টাকা থাকা লাগবে। আপনি চাইলে তখন টাকাগুলো যেকোন ধরনের ব্যবসা বিনিয়োগ করতে পারবেন। 

কিন্তু আপনার কাছে টাকা না থাকলে সেটা কখনোই সম্ভব হবে না। অবশ্য এতে আপনার কোন দোষ নেই। কারণ ছোটবেলা থেকেই আপনি বিভিন্ন ভাবে অনেক টাকাই হাতে পেয়েছেন। কখনো কোন কিছু কিনতে অথবা হাত খরচ হিসাবে টাকা গুলো আপনার কাছে এসেছিল। কিন্তু আপনি সব অর্থই খরচ করে ফেলেছেন।

একটা নির্দিষ্ট সময় পরে আপনার অনেক অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। তখন আপনি কি করবেন? তখন আপনাকে ব্যবসা করতে হবে। “ব্যবসা” কারণ ব্যবসা ছাড়া আপনি সহজে কোটিপতি হতে পারবেন না। 

এখন আপনি যে ব্যবসাই করবেন, তাঁর জন্য অবশ্যই আপনাকে সময় ও টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু এখন কথা হল, আপনি ব্যবসা শুরু করার টাকা কোথায় পাবেন? এক্ষেত্রে, ছাত্রজীবনে মোবাইল, বই ,গাড়ি ভাড়া ইত্যাদির খরচ অনেকেই জমিয়ে রাখে। তাছাড়া আপনি চাকরি বা টিউশনির ১৫ থেকে ২০ ভাগ সঞ্চয় করে রাখতে পারেন।

এই জমানো টাকা দিয়ে তো আর আপনি কোটিপতি হতে পারবেন না। কোটিপতি হতে গেলে আপনাকে কোন একটি ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে হবে। আপনি সঞ্চয় করা যত কম বয়স থেকে শুরু করবেন তত দ্রুত আপনি কোটিপতি হতে হতে পারবেন। প্রথমদিকে, আপনার মূলধন দিয়ে, ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু বা কোথাও বিনিয়োগ করলেন। ফলশ্রুতিতে, ৫-৬ মাস পর আপনার আসতে শুরু লভ্যাংশ করবে।

সুতরাং, আজকের এই আর্টিকেলে, ব্যবসা করে দ্রুত কোটিপতি হওয়ার অসাধারণ ১৫ টি কলা-কৌশল নিয়ে আলোকপাত করবো। চলেন শুরু যাক–

কোটিপতি হওয়ার ব্যবসা শুরু করার কৌশল:

১) প্রথমেই আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, ধৈর্য সাফল্যের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

২) কোন কাজ কাল থেকে শুরু করব এই ধরনের চিন্তাভাবনা বাদ দিতে হবে। আজ থেকে শুরু করে দিতে হবে আপনার কাজ। এতে করে আপনি দেখবেন কালকের থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছেন। তাছাড়া কাল থেকে শুরু করতে গেলে ভুলেই যাবেন, যে কোথা থেকে কিভাবে শুরু করতে হবে।

See also  কিভাবে একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা শুরু করা যায়?

৩) আপনার মাথায় যেসকল কার্যকর পরিকল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে, সেই সকল পরিকল্পনার উপরে আপনি আপনার  স্কিল বাড়াতে থাকেন। অযথা শুধু শুধু  সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই। 

৪) আপনার যতটুকু আয় তার থেকে ১৫-২০ ভাগ থেকে সঞ্চয় করতে হবে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে হবে। মূলত কোটিপতি  হওয়ার কোন সহজ রাস্তা নাই। নিজের সাথে বহু বছর যুদ্ধ করে, নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করে, জীবনে প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করে তবেই টাকার পাহাড় তৈরি করা সম্ভব।

৫) আপনার টার্গেট সেট করুন। আপনি ১০ বছর বা ১২ বছরের মধ্যে কোটিপতি হবেন। এরমধ্যে আপনি আপনার স্কিল ও সঞ্চয় বাড়াতে থাকুন। এই স্কিলগুলো মূলত আপনার আয় কে প্রভাবিত করবে। তাছাড়া জ্ঞান অর্জনের জন্য ব্যবসা ভিত্তিক মোটিভেশনাল বই পড়তে পারেন। আর বর্তমানে  সবকিছুই তো ইউটিউব বা গুগলে পাওয়া যায়। স্যোশাল মিডিয়ায়  আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময় একটু কম ব্যয় করুন। মনে রাখবেন, সময় আপনার জন্য খুবই মূল্যবান।

৬) ব্যবসা করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই নিম্নের বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবেঃ

  • কাস্টমারকে কিভাবে প্রভাবিত করা যায়, 
  • কাস্টমারের চাহিদা নির্ণয় করন,
  • সফটওয়্যার ও কম্পিউটারের উপর বিশেষ জ্ঞান থাকতে হবে। ( আপনার জ্ঞান যত গভীর হবে ততই ভালো, 
  • ইংলিশে দক্ষতা হতে হবে,
  • এ্যাকাউন্টস, ফাইন্যান্স, মন নিয়ন্ত্রণ, মেডিটেশন এই সকল স্কিল গুলো আপনার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজে লাগবে।

৭) কোন পণ্য বা সেবা কেনার আগে অবশ্যই আপনার একবার ভাবুন পণ্য বা সেবা কিনে টাকা খরচ করা আপনার জন্য কতটা যুক্তিসংগত। আপনি সাত থেকে দশ দিন অপেক্ষা করুন এবং ভাবুন সত্যিই প্রয়োজন কিনা যদি প্রয়োজন মনে হয় তবে কিনুন। আপনার সবচেয়ে বেশি সুবিধা সেই ধরনের পন্য ক্রয় করুন। যদি প্রয়োজন না হয় দেখবেন আপনি ভুলেই গেছেন।

৮) এক বছরে আপনার মোট সঞ্চয় কত হলো তা হিসাব করুন। এবার ঐ জমানো টাকার তিন ভাগের এক ভাগ ভবিষতে যদি বড় কোনো সমস্যা হয় তার জন্য রাখুন। আর দুই ভাগ কোথাও বিনিয়োগ করুন। যদি আপনার হাতে বিনিয়োগের সম্ভাব্য ভালো কোন জায়গা না থাকে তবে ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করা শুরু করে দিন।

See also  আউটসোর্সিং কি, কীভাবে শিখবেন, আয় করবেন ?

৯) ধীরে ধীরে চেষ্টা করুন দুই বা তিনটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করুন তাতে আপনি বুঝতে পারবেন যে, কোনটা থেকে আপনার বেশি ইনকাম হচ্ছে। আর কোনটা থেকে কম ইনকাম হচ্ছে। এর ফলে, আপনি বুঝতে পারবেন কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা উচিত।

১০) এমন ব্যবসা শুরু করুন, যাতে অন্য কেউ শুরু করতে চাইলে তাকেও অনেক কাঠ–খড় পোড়ানো লাগে অর্থাৎ আপনার ব্যবসা শুরু করতে যত বেশি বাধা থাকবে অন্যদের তা শুরু করতে ততই কঠিন হবে। 

১১) কাস্টমারের প্রয়োজন কে জানতে বা বুঝতে হবে। কাস্টমারের প্রয়োজন কেমন সেই অনুযায়ী আপনাকে যোগান দিতে হবে। কাস্টমারের প্রয়োজন হচ্ছে কিন্তু আপনি তা বানিয়ে ফেললেন অর্থাৎ আপনার যা লাগবে না,  তার পেছনে আপনি কি কখন টাকা খরচ করবেন। অবশ্যই কখনো করবেন না। তেমনি কাস্টমারও করবে না । তাই আগে কাস্টমারের প্রয়োজনকে বুঝতে হবে।

১২) বর্তমানে, ব্যবসার ক্ষেত্রে, অনলাইনে  ব্যবসা সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। কারণ এখন প্রতিটা মানুষ প্রায় ইন্টারনেটের ওপর নির্ভর। তাই অনলাইনে ব্যবসাযর ক্ষেত্রে লাভের পরিমাণ প্রায় ৯০% পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই আপনি চাইলে, অনলাইনে ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। 

১৩) ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে অবশ্যই ঐ ব্যবসা সম্পর্কে যতদূর সম্ভব খোঁজখবর নিতে হবে। যেমন, আপনি অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন, তাহলে অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করে যে ব্যক্তি সফল হয়ে তাঁর কাছ থেকেই পরামর্শ নিতে হবে বা অন্যান্য বিষয় খোঁজখবর নিতে হবে।

১৪) সফলতার জন্য পাগল হয়ে যেতে হবে। সফল হতেই হবে, মনে রাখবেন সবাই শিশু হয়ে আসে কিন্তু যার যার ইচ্ছা ও মানসিক শক্তি দ্বারা পৃথিবীতে জায়গা করে নেয়।

১৫) জীবনে চলার পথে কিছু বন্ধু পাবেন যারা সবসময় সব বিষয়ে নেগেটিভ আচরণ করে থাকে। কোন ব্যবসা করতে গেলে তারা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সামনে নিয়ে আসে। এই সকল বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয় স্বজন থেকে সাবধান থাকবেন, কারণ এরা আপনার জীবন ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।

See also  ভারতের টাটা কোম্পানির ইতিহাস

পরিশেষেঃ

আপনার সঞ্চয় দিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিন বা কোথাও বিনিয়োগ করুন। যাতে আপনি টাকা উপার্জন করতে পারেন এবখ কোটিপতি হতে পারেন। তাছাড়া আপনি যখন ব্যবসা করবেন তখন অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

কিন্তু এর জন্য অবশ্যই আপনাকে পরিকল্পনা ও নিয়মমাফিক কাজ করতে হবে। আর্টিকেলটি পড়ার তো মোটামুটি তো একটা ধারণা পেয়ে গেছেন, তাহলে আজ থেকেই শুরু দিন আপনার ব্যবসা।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *