চীনের মহাপ্রাচীর

অসাধারণ স্থাপত্য চীনের মহাপ্রাচীর (গ্রেট ওয়াল)

চীনের মহাপ্রাচীর (গ্রেট ওয়াল) একটি অসাধারণ স্থাপত্য জাতির প্রতীক এবং ক্ষমতার প্রমাণ। দুই হাজার এর বেশি সময় ধরে অক্ষত ভাবে দাঁড়িয়ে থাকার রহস্য কি আধুনিক প্রযুক্তি উন্মোচন করতে পেরেছে ? এর রহস্য আজো অজানা এবং এটি মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টিশৈলী গুলোর মধ্যে অন্যতম। বিস্ময়কর নির্মাণ গুলোর মধ্যে এটি যেমন বিস্ময়কর তেমনি অত্যাধুনিক চিন্তাচেতনার সমন্বয়ে তৈরি।

আজকের এ পর্বে আমরা জানব, এই গ্রেট ওয়াল কেন নির্মাণ করা হয়েছিল এবং কেন জীবনে একবার হলেও তা দেখতে যাওয়া উচিৎ। গ্রেট ওয়াল ভ্রমনে যান বা নাই যান এই তথ্যগুলো অবশ্যই আপনার জানা প্রয়োজন। গ্রেট ওয়াল চীনের হোয়াইরো জেলায় অবস্থিত। এই গ্রেট ওয়াল পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য গুলোর মধ্যে একটি।

চীনের মহাপ্রাচীরের ছবি
ছবিঃ চীনের মহাপ্রাচীর

চীনের মহাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ কত?

  • চীনের মহাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য ২১,১৯৬ কি.মি.।
  • চীনের প্রাচীর ৫-৮ মিটার (১৬-২৬ ফুট) উঁচু।
  • গ্রেট ওয়াল প্রায় ৮-১০ মিটার (২৬ – ৩৩ ফুট) প্রশস্ত। সধারনত এখানে প্রতিদিন ৬৫ হাজার দর্শনার্থী এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।

কেন নির্মাণ করা হয়েছিল চীনের মহাপ্রাচীর?

আনুমানিক ৭ম শতকের প্রথম দিকে রাজা কিন শি হুয়াং এর নেতৃত্বে প্রথম গ্রেট ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিলো। তখন এটি এমনটা ছিলনা। তখন এটি খন্ড খন্ড রাজ্যের খন্ড খন্ড ভাগে বিভক্ত ছিল। পরবর্তীতে মিং রাজাবংশ এর বর্তমান এর রূপটি দেন। রাজা কিন শি হুয়াং উত্তরের বর্বর জাতির হামলা প্রতিহত করার লক্ষে এ প্রকান্ড প্রকল্পটি হাতে নেন। এ সবই করা হয়েছিল উত্তর দিক থেকে আসা যাযাবর বা, শত্রুদের আক্রমণ ঠেকাতে।

এবার আলোচনা করব যে কারনে ভ্রমনের জন্য যাওয়া উচিৎ। করোনার মহামারির পর এখন এই দর্শনীয় স্থানটি দর্শনার্থী এর জন্য সীমিত পরিসরে খুলে দিয়েছে।

গ্রেট ওয়াল এর একদম উচুতে আপনি চাইলে তাবু গেরে কয়েকদিন ক্যাম্পিং করতে পারবেন। তার জন্য সেখানে মোটামুটি ভালো পরিমান খরচ হতে পারে আপনার। তবে খরচ যতই হোক না কেন, আপনার স্মৃতিতে রচিত হবে কিছু স্বর্ণ খচিত অভিজ্ঞতা। আপনার ভ্রমন যাত্রায় যুক্ত হবে নতুন এক মাত্রা।

See also  জেরুজালেম শহরটি বিখ্যাত কেন?

আসলে আপনি যা মনে করছেন তার চেয়ে বড় এই গ্রেট ওয়াল। আপনি যখন এটিতে আরোহণ করবেন তখন সত্যিই আপনি এর ভূয়সী প্রশংসা করবেন যে এটি কতটা আশ্চর্যজনক। দর্শনার্থীরা যখন এর উপর আরোহন করে তখন নির্বাক হয়ে পুরাণপ্রসিদ্ধ মনোমুগ্ধকর স্থাপনাশৈলী এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মিশ্রনে হারিয়ে যায়।

ঋতুর সাথে তাল মিলিয়ে গ্রেট ওয়্যাল-এর প্রাকৃতিক দৃশ্য পরিবর্তন হতে থাকে। বিপূল পর্যটক ও জমায়েত এড়াবার জন্যও উপযুক্ত সময় বসন্তকাল। বসন্তকালে, প্রাচীরটি গাছপালা দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে ওঠে, এইসময় গাছপালাগুলি সবুজ আকার ধারণ করে এবং সমস্ত কিছুই সতেজ দেখায়। এছাড়াও সাধারণত গ্রীষ্মকাল ও শরৎকালে এখানে ঘুরতে আসার ঝোঁক দেখা যায়। প্রাচীরটির পরিপূর্ণ দৃশ্য পরিদর্শনের সেরা সময় হল শীতকাল, এইসময় প্রাচীর ও পর্বতগুলি তুষারাবৃত থাকে।

Similar Posts

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *