ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাস এবং এর অদৃশ্যমান প্রভাব।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শুধু ২০০ ‘শ বছর নয় বরং প্ররোক্ষভাবে আজো সেই শাসনের দাবদাহ কাঁধে বয়ে নিয়ে বেরাতে হচ্ছে আমাদের।
আমরা কি সেই শাসন শোষনের দাবদাহের শেকল থেকে আদৌ মুক্তি হতে পেরেছি?
১৭৫৭ সালে নাবাব সিরাজউদৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে যে শিখর অস্তমিত হয়েছে সে শিখর আজো ঠিকভাবে দাড়াতে পারেনি। আর কবে পারবে তাও সঠিকভাবে বলা কঠিন।
ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে ব্রিটিশরা যেই বীজ বপন করে গিয়েছে, সেই বীজ তার শাখা-প্রশাখা কান্ড পাতা ছড়িয়ে এক অদৃশমান জাদুময়ী বটগাছ হয়ে আজো বসে আছে।
আমারা স্বধীন হয়েছি বটে কিন্তু আজো ব্রিটিশদের কুটনৈতিক বেড়াজাল থেকে মুক্তি হতে পারিনি।
আজ আপনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের এমন কিছু বিষয় জানতে চলেছেন যা আপনার আমার সকলের চিন্তার প্রসার ঘটাতে চলেছে।
১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ সালের আগ পর্যন্ত সকল কার্যক্রম ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নামে পরিচালিত ছিল। ১৮৫৭ সালে তার নাম পরিবর্তন করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য দেয়া হয়।
ইংরেজরা সবসময় চাইতো এ অঞ্চলের মানুষদের সুদুরপ্রসারী অবনতি। তার শাসন শোষন এমন ভাবে পরিচালনা করতো যেন এ অঞ্চলের মানুষ, তাদের মৌলিক অধিকার মানে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদির প্রয়োজন পূরণ করতে করতে যেন তাদের জীবন পাড় হয়ে যায়।
এমনি করে তারা এ জাতিকে শিকিভাগ ও শিক্ষাদানে উদ্বুদ্ধ করেনি। কারন তারা জানে, যদি এই জাতি শিক্ষা-দিক্ষায় এগিয়ে যায় তবে এদেরকে শাসন ও শোষন করা মুসকিল হয়ে যাবে।
ব্রিটিশ শাসনের ফলে এ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ অত্যন্ত গরীব হয়ে পড়ে। অগনিত মানুষ না খেয়ে মারা যায়। ব্রিটিশরা এদেশ থেকে ফসল ফলিয়ে নিয়ে যেত তাদের দেশে। যখন এদেশের অগনিত মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে তখন ব্রিটিশদের দেশে খাদ্যের সমাহার।
ভারত উপনিবেশ থেকে ব্রিটিশরা এতই সম্পদ লুন্ঠণ করেছে যে, আগামী কয়েক শত বছর যদি ব্রিটিশ চায় তবে বসে বসে খেতে পারবে।
আমাদের এ ক্ষতি আগামী ২০০ বছরেও পুরন হবার নয়।
আমাদের এ অঞ্চলসহ সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ন ভেঙ্গে দিয়ে তার নিজ দেশকে সমৃদ্ধ করেছে এবং নিজেকে সমৃদ্ধ করেছে। যেই রীতি আজো ভিন্নধারায় চলমান।
ব্রিটিশদের নিজেদের পিঠ বাঁচানোর অন্যতম হাতিয়ার হলো ”ভাগ কর শাসন কর” নীতি।
ধর্মে ধর্মে বিরোধ সৃষ্টি করে আজ ব্রিটিশ জাতি নিশ্চিন্ত মনে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ।
তারা জানতে এবং বুজতে পেরেছিলো যদি ধর্ম বিভেদ ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের মাঝে সৃষ্টি করা যায় তবে ব্রিটিশদের ক্ষতি করা বা প্রতিযোগীতা করার সময় তারা পাবেনা। তারা এ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে আর ততো দিনে ব্রিটিশরা তাদের তল্পিতল্পা গুছিয়ে চলে যেতে পারবে। তাই ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্মের বিভেদ ঘটিয়ে ৩ টি খন্ডে ভাগ করে যায়। যেন তারা সদা তাদের দাবি আদয়ে ব্যস্ত থাকে।
পৃথিবীর যত দেশে ব্রিটিশ জাতি শাসন করেছে সকল জায়গায় কালো অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
তাদের মূল ধর্মই ছিলো অত্যাচার করে শাসন ও শোষণ কর তবেই এই পার্থিব জগতে ধন সম্পদ ও প্রতিপত্তিতে জয়ী হতে পারবে।
যা আজো আমাদের দূর্ভগ্যবশত দেখতে এবং শুনতে হচ্ছে।
আশা করছি আমাদের এই ব্যাখ্যা আপনাদের চিন্তাকে একটু হলেও প্রসারিত করতে সাহায্য করবে।

Bachelor of Business Administration,
East West University