কে কেন কখন কিভাবে মিশরের পিরামিড তৈরি করেছিল?
বর্তমানে পৃথিবীর সকল সপ্তম আশ্চর্য এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন আশ্চর্য হচ্ছে মিশরের পিরামিড।
ঐতিহাসিক বিদের তথ্যসূত্রে জানা যায় এর আবিষ্কার হয়েছে প্রায় সাড়ে চার বছর আগে।
আজকের এই পর্বে আমরা জানব পিরামিড তৈরির আসল রহস্য। কি কারনে পিরামিড বানানো হয়েছে? এবং কেন এটি পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় ১ম?
প্রথমেই পিরামিড সম্পর্কে ২/১ টি কথা যা না বললেই নয়। ২৭৮০ খ্রিষ্টপূরবাব্দে বা তার আশেপাশে রাজা জোসার যিনি একজন বিখ্যাত স্থপতি শিল্পী তিনি নীল নদের তীরে প্রথম পিরামিড স্থাপনা করেন। তার পর থেকে মিশরে ১১৮ টি পিরামিড এর সন্ধান মেলে এবং এই পিরামিড তৈরির কৌশল আজো আধুনিক স্থপতি শিল্পীদের নিকট এক রহস্যমন্ডিত ব্যপার।
এবার আলোচনা করব, যে কারনে পিরামিড বানানো হয়েছিলো। প্রাচীন মিশরের পিরামিড একমাত্র ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছিল। তারা পুনর্জন্ম এ বিশ্বাসি ছিলো।
প্রাচীন ও মধ্য রাজ্য আমলে দেশের আধিকাংশ ফারাও এবং তাদের সহধর্মীদের জন্য সমাধি হিসেবে নির্মিত হয়েছিল এই পিরামিড। আসলে সমাধী বলতে এই পিরামিড এর ভেতর তারা সমাজের উচ্চ বংশীয় বা ক্ষমতাধর ব্যাক্তিদের মমি করে রাখাতো।
তারা বিশ্বাস করত যে প্রতিটি মানুষ এর মধ্যে “কা” নামের একটি আত্মা বাস করে যা মৃত্যুর পর পর পুনর্জন্ম পায়। সে সকল আত্মারা হচ্ছে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ আত্মা। তারা মানুষের কোলাহল পছন্দ করেনা বলেই তাদের নীল উপত্যকা পাড়ে জনাশুন্য স্থানে সমাধী দেয়া হতো।
এটি কেন আজবদি সপ্তম আশ্চর্যের এর তালিকায় ১ম স্থান দখল করে আছে?
পিরামিড পৃথিবীর প্রাচীন বিস্ময় গুলোর মধ্যে ১ম স্থান দখল করার প্রধান কারন হচ্ছে এর শিল্পশৈলী এবং অনিন্দ্য সৌন্দর্য। মিসরিওরা পিরামিড তৈরির সময় লগ রোলার এবং স্লেজ ব্যবহার করেছিলো পাথরগুলোকে বসানোর জন্য।

১১৮ টি পিরামিড এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগে গিজায় অবস্থিত ৩ টি পিরামিড সবচেয়ে বেশি সৌন্দর্যমন্ডিত।
এই ৩ টি ই হচ্ছে আশ্চর্যের প্রধান বিষয়বস্তু। পিরামিড ৩ টির নাম হচ্ছে
১) পিরামিড অব খুফু
২) পিরামিড অব খাফ্রে
৩) পিরামিড অব মেনকউরে।
এদের উচ্চতা যথাক্রমে ১৩৮, ১৩৬ এবং ৬১ মিটার। এটি মানব সৃষ্ট সবচেয়ে বেশি রহস্যময় নির্মাণশৈলী, ১৮৮৯ সালে আইফেল টাওয়ার নির্মাণের পূর্বে এটিই ছিলো পৃথিবীর উচ্চতম নির্মাণ।
খুফু পিরামিড টি তৈরি করতে সময় প্রায় ২০ বছর সময় লেগেছিলো। এর জন্য ৩ মাস শিফট করে কাজ করেছিলো প্রায় ১ লক্ষ লোক এই সকল লোক বল এন্ড স্টক টেকনলোজি ব্যবহার করে ঐ সব দৈত্যকার পাথরগুলোকে একের পর এক সাজিয়ে রাখতো।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই বল এন্ড স্টক টেকনলোজি ব্যবহার করে আমরা ও তো এর চেয়ে বড় কিছু নির্মাণ করতে পারি।
আশ্চর্য এর বিষয়টা আসলে এখানেই। যদি সম্ভব হতো, পিরামিডের চেয়ে বড় স্থপতি অনেক আগেই তৈরি হতো। এর মধ্যে আরো বড় আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এতো বিশাল নির্মাণ এর ভেতরে সর্বক্ষণ থাকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। আরো রয়েছে পর্যাপ্ত আলো প্রবেশের ব্যবস্থা। প্রাকৃতিক ভাবে এর সকল বিষয় একসাথে বজায় রাখা সত্যি আশ্চর্যের বিষয়।
গবেষকরা আজো এর রহস্য উন্মোচনের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আশা করা যাচ্ছে রহস্যেঘেরা এই পিরামিড এর সকল রহস্য়ের গিট স্পষ্ট হবে অতিশীঘ্র।