৩০টি বিখ্যাত হুমায়ুন আজাদের উক্তি

হুমায়ুন আজাদ ছিলেন একজন বিখ্যাত উপন্যাসিক তথা ভাষাবিজ্ঞানী তার সাহিত্য কর্মের জন্য সারা বিশ্বের মানুষ এখনো তাকে কুর্ণিশ জানায়। তিনি ছিলেন গতানুগতিক তথা প্রথাবিরোধী লেখক। যার জন্য তাকে অনেক বিতর্কের সম্মুখীন হতে হয়েছিল।

এই বিখ্যাত মানুষটির  জন্ম হয়েছিল ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল । তিনি ছিলেন কবি ,উপন্যাসে ,গল্পকার ,সমালোচক ,গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী ,কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। এই গুণধর মানুষটি ধর্ম ,মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কার বিরোধিতা ,নিরাবরণ যৌনতা, নারীবাদ ,রাজনৈতিক এবং নির্মম সমালোচনা মূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০’র  দশক থেকে ব্যাপক পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

তিনি ৭টি কাব্যগ্রন্থ ,১২ টি উপন্যাস ,২২টি সমালোচনা গ্রন্থ ,৭টি ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক, ৪টি কিশোরসাহিত্য ও আরো অনেক গ্রন্থ লিখেছেন। 60 টিরও অধিক গ্রন্থ তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদকএবং বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন।

হুমায়ুন আজাদের  বিখ্যাত উক্তি 

“মানুষ ও কবিতা অবিচ্ছেদ্য । মানুষ থাকলে বুঝতে হবে কবিতা আছে, কবিতা থাকলে বুঝতে হবে মানুষ আছে | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ জনপ্রিয়তা হচ্ছে নেমে যাওয়ার সিঁড়ি। অনেকেই আজকাল জনপ্রিয়তার পথে নেমে যাচ্ছে | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ কবিরা বাঙলায় বস্তিতে থাকে, সিনেমার সুদর্শন গর্দভেরা থাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রাসাদে | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ পরমাত্মীয়ের মৃত্যুর শোকের মধ্যেও মানুষ কিছুটা সুখ বোধ করে যে সে নিজে বেঁচে আছে | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ ব্যর্থরাই প্রকৃত মানুষ, সফলেরা শয়তান | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ মৌলিকতা হচ্ছে মঞ্চ থেকে দূরে অবস্থান | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ, তবে বাঙালির ওপর বিশ্বাস রাখা বিপজ্জনক | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ বুদ্ধিজীবীরা এখন বিভক্ত তিন গোত্রে। ভন্ড, ভন্ডতর, ভন্ডতম | ” – হুমায়ূন আজাদ 

 “তৃতীয় বিশ্বের নেতা হওয়ার জন্যে দুটি জিনিশ দরকার : বন্দুক ও কবর | “ – হুমায়ূন আজাদ 

“ একজন চাষী বা নদীর মাঝি সাংস্কৃতিকভাবে যতোটা মূল্যবান, সারা সচিবালয় ও মন্ত্রীপরিষদও ততোটা মূল্যবান নয় | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ বেতন বাঙলাদেশে এক রাষ্ট্রীয় প্রতারণা। এক মাস খাটিয়ে এখানে পাঁচ দিনের পারিশ্রমিক দেয়া হয় | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ সুন্দর মনের থেকে সুন্দর শরীর অনেক আকর্ষনীয়। কিন্তু ভন্ডরা বলেন উলটো কথা | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“এখানে অসতেরা জনপ্রিয়, সৎ মানুষেরা আক্রান্ত।  ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ বিশ্বের নারী নেতারা নারীদের প্রতিনিধি নয়; তারা সবাই রুগ্ন পিতৃতন্ত্রের প্রিয় সেবাদাসী | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ একনায়কেরা এখন গণতন্ত্রের স্তব করে, পুজিঁপতিরা ব্যস্ত থাকে সমাজতন্ত্রের প্রশংসায় | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“বাঙালি আন্দোলন করে, সাধারণত ব্যর্থ হয়, কখনোকখনো সফল হয়; এবং সফল হওয়ার পর মনে থাকে না কেনো তারা আন্দোলন করেছিলো | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“মানুষ সিংহের প্রশংসা করে, কিন্তু আসলে গাধাকেই পছন্দ করে | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ শয়তানই আজকাল আল্লা আর ঈশ্বরের নাম নিচ্ছে প্রাণ ভ’রে। আদিম শয়তান আর যাই হোক রাজনীতিবিদ ছিলো না, কিন্তু শয়তান এখন রাজনীতি শিখেছে; আল্লা আর ঈশ্বর আর জেসাসের নামে দিনরাত শ্লোগান দিচ্ছে | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“নিজের নিকৃষ্টকালে চিরশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গ পাওয়ার জন্য রয়েছে বই; আর সমকালের নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গ পাওয়ার জন্যে রয়েছে টেলিভিশন ও সংবাদপত্র | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“ একনায়কেরা এখন গণতন্ত্রের স্তব করে, পুজিঁপতিরা ব্যস্ত থাকে সমাজতন্ত্রের প্রশংসায় | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“পুঁজিবাদের আল্লার নাম টাকা, মসজিদের নাম ব্যাংক | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“আগে কারো সাথে পরিচয় হলে জানতে ইচ্ছে হতো সে কী পাশ? এখন কারো সাথে দেখা হলে জানতে ইচ্ছে হয় সে কী ফেল ? ” – হুমায়ূন আজাদ 

“হিন্দুরা মুর্তিপূজারী; মুসলমানেরা ভাবমুর্তিপূজারী। মুর্তিপূজা নির্বুদ্ধিতা; আর ভাবমুর্তিপূজা ভয়াবহ | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“আমাদের অঞ্চলে সৌন্দর্য অশ্লীল, অসৌন্দর্য শ্লীল। রুপসীর একটু নগ্ন বাহু দেখে ওরা হৈ চৈ করে, কিন্তু পথে পথে ভিখিরিনির উলঙ্গ দেহ দেখে ওরা একটুও বিচলিত হয় না | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“শ্রদ্ধা হচ্ছে শক্তিমান কারোর সাহায্যে স্বার্থোদ্ধারের বিনিময়ে পরিশোধিত পারিশ্রমিক | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“সুন্দর মনের থেকে সুন্দর শরীর অনেক আকর্ষনীয় কিন্তু ভন্ডরা বলেন উলটো কথা | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“পুরস্কার অনেকটা প্রেমের মতো; দু-একবার পাওয়া খুবই দরকার, এর বেশি পাওয়া লাম্পট্য | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“বাঙালি যখন সত্য কথা বলে তখন বুঝতে হবে পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে | ” – হুমায়ূন আজাদ 

“যারা ধর্মের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়, তারা ধার্মিকও নয়, বিজ্ঞানীও নয়। শুরুতেই স্বর্গ থেকে যাকে বিতারিত করা হয়েছিলো, তারা তার বংশধর | ” – হুমায়ূন আজদ

“প্রতিটি সার্থক প্রেমের কবিতা বলতে বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে পায়নি, প্রতিটি ব্যর্থ প্রেমের কবিতা বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে।  ” – হুমায়ূন আজাদ 

“বাঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে বই খুলুন, অবাঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে টেলিভিশন খুলুন | ” – হুমায়ূন আজাদ 

 “এখানকার একাডেমিগুলো সব ক্লান্ত গর্দভ; মুলো খাওয়া ছাড়া ওগুলোর পক্ষে আর কিছু অসম্ভব | “– হুমায়ূন আজাদ 

 হুমায়ুন আজাদের সাহিত্য জীবন শুরু হয়েছিল ক্লাস নাইন থেকে ।সেই সময় ” ঘড়ি বলে টিকটিক ” নামে তার একটা প্রবন্ধ বাংলাদেশের প্রখ্যাত সংবাদপত্র ‘দৈনিক ইত্তেফাকে’ প্রকাশ পায়। স্নাতক পড়াকালীন সময়ে কবিতা লেখার মাধ্যমে তাঁর লেখার পূর্ণ রূপ লাভ করে। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক ।গতানুগতিক চিন্তাধারা তিনি সচেতনভাবে পরিহার করতেন। তার নরী( ১৯৯২) দ্বিতীয় লিঙ্গ (২০০১)এবং পাক সার জমিন সাদ বাদ

(২০০৪) গ্রন্থ ৩টি বির্কের ঝড় তুলে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই মহান মানুষটি ২০০৪ সালের ১২ ই আগস্ট জর্মানের মিউনিখ শহরে মৃত্যু বরণ করেন। বাংলাদেশের রাঢ়িখাল তাকে সমাহিত করা হয়েছে।